বাজারে হঠাৎ করে চালের দাম বেড়ে গেছে দিনাজপুরে
চালের বাজার স্থিতিশীল রাখতে সরকারের চাল আমদানির সিদ্ধান্তে কোন প্রভাব পড়েনি বাজারে। মিলাররা ইচ্ছেমতো দাম বৃদ্ধি করছেন। সরবরাহ চাহিদা পর্যাপ্ত থাকলেও দিনাজপুরের বাজারে হঠাৎ করে চালের দাম বেড়ে গেছে।
মিলাররা বলছেন, বাজারে ধান নেই এছাড়া আন্তর্জাতিক বাজের চালের দাম বেশি। এর প্রভাব দেশের বাজারে পড়েছে।
শহরের সবচেয়ে বড় বাহাদুর বাজার চালের মার্কেটে ৫০ কেজি ওজনের প্রতিবস্তা ২৮ চাল বিক্রি হচ্ছে ২৭৫০ টাকা, স্বর্ণ ২৩৫০ টাকা, সুমন স্বর্ণ ২৫০০ টাকা, গুটি স্বর্ণ ২২০০ টাকা, মিনিকেট ৩১০০ টাকা, বাসুমতি ৩৪০০ টাকা, নাজির শাইল ৩০০০ টাকা, কাঠারী চাল ৪৫০০ টাকা।
আমদানি করা চালের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন খুচরা বিক্রেতারা। তারা বলছেন, চালের মান ভালো না হওয়ায় ক্রেতারা নিতে আগ্রহী হচ্ছেন না। ফলে দেশি চালের চাহিদা বেড়ে গেছে। শ্রমিক, দিনমজুর, স্বল্পআয়ের মানুষরা আজ কাল ভালোমানের চাল খেতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে।
পাইকার-আড়তদাররা বলছেন, আমদানিকৃত চাল বাজারে ঢুকলে খুচরা বাজারে দাম কমবে এমন অজুহাত কাজে আসেনি। মিলাররা সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করেন। তারা চালের দাম দফায় দফায় বৃদ্ধির কারণে বাজারে চালের মূল্য বেশি। এনিয়ে গত ৪ মাসে ৫ বার দাম বেড়েছে।
চালের সবচেয়ে বড় বাজার রেলবাজার, চকবাজার এবং বাহাদুর বাজারের পাইকার-আড়তদাররা এবং খুচরা বিক্রেতারা জানিয়েছেন, মিলাররা অধিক মুনাফার কারণে চালের দাম ইচ্ছেমত বৃদ্ধি করে।
চালকল মালিক গ্রুপ এর যুগ্ম সম্পাদক আজিজুল ইকবাল চৌধুরী দাবি করেন, বাজারে ধানের দাম বেশী। চালের উংপাদন খরচের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে চালের দাম নির্ধারণ করা হয়। এছাড়া আন্তর্জাতিক বাজারে চালের দাম বেশি। এর প্রভাব দেশের বাজারে পড়েছে।
খাদ্যভাণ্ডার বলে খ্যাত দিনাজপুরে আমন ধান উঠার পর এখন বোরো মৌসুম চলছে। ভরা আমন মৌসুমে চালের দাম বৃদ্বির বিষয়টিকে অস্বাভাবিক বলে মনে করছেন খাদ্য বিশেষজ্ঞরা।
এ ব্যাপারে অর্থনীতিবিদ অধ্যক্ষ হাবিবুল ইসলাম বাবুল বলেন, এই জেলা থেকে যে পরিমাণ ধান উৎপাদন হয় জেলার চাহিদা মিটিয়ে জাতীয় ভান্ডারে ৯ থেকে ১০ লাখ মেট্রিক টন চাল দেওয়া হয়। তিনি সরাসরি মিলারদের সিন্ডিকেটকে দায়ী করেন। বলেন, এ অঞ্চলে ৫/৬ জন মিলার বাজার নিয়ন্ত্রণ করেন। সরকারের বাজার মনিটরিংয়ে বড় রকমের গাফিলতি রয়েছে বলে তিনি মনে করেন।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আশরাফুজ্জামান জানিয়েছেন, বেসরকারী পর্যায়ে দিনাজপুরের ২২ জন ব্যবসায়ী ৬৯ হাজার মেট্রিক টন চাল আমদানির অনুমতি পেয়েছে। এ পর্যন্ত চাল আমদানি হয়েছে ৩৬ হাজার ৪০৫ মেট্রিক টন।